কথা ছিল কোন এক দোল পূর্ণিমাতিথিতে পাহাড়ে যাব
জোছনা স্নানে ভেজাবো নীল শাড়ি
আকণ্ঠ পান করে জন্ম নেবে এক অনাদি কালের নারী।
যেখানে আঙিনা জোড়া মাধবীলতায় জোছনা বিলাস
ঝিঁ ঝিঁ পোকার সুর সপ্তমে ঘুম পাড়ানির বাস।
নীল টিপ, নীল চুড়ি, নীল শাড়ি
থৈ থৈ জোছনায় ভেসে যায় জোছনাবাড়ি।
জোছনা বৃষ্টি হবে রাতভর,
জংগুলে গাছের ফাঁকেফাঁকে
ছুঁয়ে যাবে রাতের অধর।
এক সাগর তৃষ্ণা নিয়ে নতজানু হই চাঁদের কাছে
ঠায় বসে থাকি দেখবো বলে
কি করে?
জোছনা টলমল বিলে নামে বালি হাঁস
জোছনা জলে, গলে যায় রাতের আকাশ,
জোছনা প্রেমে ভিজে, লেপ্টায় সবুজ ঘাস।
মাঝে মাঝে মেঘের আড়াল থেকে উঁকি মারে
জড়িয়ে রাখা নীলাম্বরী শাড়ির আঁচল
যেখানে বেঁধে রেখেছি আকণ্ঠ তৃষ্ণার জল!!
প্রকৃতির সেতারে বেজে যায় বেহাগ বারে বারে।
তোমার জোছনা দিনে ছিলো আমার নিমন্ত্রণ।
ভেজা শাড়িতে রাত জোছনার অবাধ্য মাতামাতি
আকাশের দরজা খুলে হুট করে নেমে আসে বসন্তদিন।
আচমকাই লুটপাট হয়ে যায় সুগন্ধি সময়
জোছনা ফুল ঝরে আঙিনাময়।
আঁচল পেতে সারারাত জোছনা কুড়াই
জোছনা বাড়ি ডুবে যায় জোছনার নেশায়।
বড় অবেলায় এক পশলা বাদল ভিজিয়ে দেয়
চাঁদের বিলে অবগাহন শেষে
হৃদয় কাব্য জুড়ে যে স্বরলিপি লিখেছি স্বপ্ন বুনি
সুর বাসা বাঁধেনি সেই কবিতার খাতায়
মৃত্তিকা জুড়ে বাজে হাহাকারের শঙ্খধ্বনি।
জোছনা চোবানো রাত নামে পাহাড়ের গায়ে
সর্বনাশের এপার ওপার দেখা যায় না,
পতনের শব্দ আসে নি:শব্দের পায়ে।
কুমারী জোছনা ফিরে যায় অন্ধকারে।
যেখানে, নক্ষত্রের গায়ে বেহায়া জোছনার
নরম অনামিকা ছুঁয়ে যায়।
সমস্ত জীবনের পতন থাকে অপেক্ষায়!
জোছনার দাপাদাপি দেখা হয় না আমার!
হাজার পায়ের ধুলোয় মলিন জোছনাবাড়ির ঢেউ
ভাঙা সিঁড়ির ধাপে বসে থাকি একা
শুকতারার সাথী হয় না কেউ।
কোন দোল পূর্ণিমাতিথি ফিরবে না জানি
নি:শব্দ উল্কার মত ইচ্ছে গুলো জনারণ্যে হারায় মানি।
মন চেয়েছিল চুইয়ে পড়া জোছনার আদর
মাতাল প্রেমে ছুঁয়ে দেবে আবার অধর।
ফেরদৌসী
২৬/৫/২০১৮
Comments